
গাজীপুরের শ্রীপুরে ফের ভেঙে পড়েছিল সেই বেইলি ব্রিজটি। ভেঙে পড়ার সাত দিন পর বুধবার রাতে তা মেরামত করা হলে এ সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গত বছরসহ চলতি বছরে ২৫ বার ভাঙল ব্রিজটি। কাওরাইদ ইউনিয়নের জৈনাবাজার-কাওরাইদ আঞ্চলিক সড়কে সোনাব গ্রামের মাটিকাটা নদীর ওপর তৈরি বেইলি ব্রিজটি ভেঙে ৭ দিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে থাকে।
ব্রিজের পূর্ব পাশের ৮টি পাটাতন ভেঙে পড়লে অচল হয় এ পথে যান চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন এ সড়কে চলাচলকারীরা। ফলে ১০ কিমি পথ ঘুরে চলতে হয়েছে নিরুপায় পথচারীদের। প্রয়োজনীয় সামগ্রী না থাকায় মেরামত করতে দেরি হয়েছে বলে জানান প্রকৌশলী রাকিবুল আহসান।
তিনি বলেন, এ বছরই স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণকাজ শুরু হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শুক্রবার রাতে একটি বালুভর্তি ড্রাম ট্রাক ব্রিজ পার হওয়ার সময় স্টিলের পাটাতনগুলো মূল কাঠামো থেকে ফসকে নিচের দিকে দেবে যায়। এরপর থেকে গত ৭ দিন ধরে অচল পড়ে ছিল। মেরামত না করাতে এ পথে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছিলেন সাধারণ যাত্রীসহ যানবাহনের চালকেরা।
নিরুপায় হয়ে অন্তত ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলতে হয়েছে তাদের। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বহুবার ব্রিজটি ভাঙলেও স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বেইলি ব্রিজটি ১৯৯৬ সালে তৈরি করা হয়। পরে অন্তত ২০ বছর কোনো প্রকার দুর্ঘটনা ঘটেনি। গত ক’বছর ধরে মাঝে-মধ্যে ভাঙে ব্রিজটি। কিন্তু গত দু’বছরে বেশ কয়েকবার ভাঙে ব্রিজটি। পরে মেরামতও করা হয়। তারা জানান এর মধ্যে ব্রিজের পাটাতন অন্তত ২৫বার ভেঙেছে। এখানে বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে স্থায়ী সেতু ( ব্রিজ) নির্মাণের জন্য অনেকবার দাবি করা হচ্ছে। এখনো স্থায়ী কোনো ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে না।
কাওরাইদ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দ্রুত যুক্ত হতে সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশপাশের অনন্ত ২৫টি গ্রামের মানুষ এ সড়ক ব্যবহার করে। পাশে গফরগাঁও এবং পাগলা থানার মানুষ এ পথে চলাচল করে।
তারা বলেন, মাটিকাটা ব্রিজটি বহুবার ভেঙে ভোগান্তিতে পরতে হয়েছে আমাদের। এখানে একটি স্থায়ী সেতু জরুরি ভিত্তিতে করা এখন সময়ের দাবি। আশা করি কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণে ব্যবস্থা নিবে।
শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাকিবুল আহসান বলেন, এটি মেরামত করতে যে ধরনের মালামাল দরকার তা আমাদের স্টকে ছিল না। সেগুলো ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করেছি। ফলে দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন, অন্য সময় ব্রিজটি ভাঙার ২৪ ঘণ্টা মেরামত করেছি। এবার সামগ্রীর অভাবে দেরি হয়েছে।
‘আমরা স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার শেষ করেছি। এখন পাশের ডাইভেশন (অস্থায়ী সড়ক) রোডের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে চেষ্টা করা হচ্ছে। নানা জটিলতায় অধিগ্রহণ দেরি হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সময়ে আমরা মাটিকাটা নদীর ওপর স্থায়ী ব্রিজের কাজে হাত দিতে পারবো। আগামী দু-এক মাসের মধ্যেই ঠিকাদার কাজ শুরু করবে বলে আশ করছি।’